Monday, 5 February 2024

 পাইলস হলে লজ্জা পাবেন না

=====================
ডাঃ এম এইচ মোহন

মলদ্বারে পাইলসের সমস্যায় অনেকে ভুগে থাকেন। এর মধ্যে অনেকেই না বুঝে ভুল চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সমস্যাটি জটিল করে তোলেন। পাইলস বা হেমোরয়েড হচ্ছে মলদ্বারের নিচের অংশে এক ধরনের রক্তের গুচ্ছ- যেটা একটা দানার মতো ফুলে যায়। মল ত্যাগ বা মল ত্যাগ না করলেও সেখান থেকে প্রায়ই রক্তপাত হয়।
পাইলসের সঠিক কোন কারণ জানা না থাকলেও ধারণা করা হয়, দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, শাকসবজী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম পান করা, অতিরিক্ত ওজন, গর্ভাবস্থা, লিভার সিরোসিস, মল ত্যাগে বেশী চাপ দেয়া, অতিরিক্ত মাত্রায় লেকজেটিভের ব্যবহার, টয়লেটে বেশী সময় ব্যয়, বৃদ্ধ বয়স, পরিবারে কারও পাইলস থাকা, ভার উত্তোলন অথবা দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে পাইলস হয়।
মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসা মানেই পাইলস নয়। চিকিৎসকই তা নিশ্চিত করতে পারবেন। পাইলসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো হল, মলত্যাগের সময় ব্যথাহীন রক্তপাত হওয়া, মলদ্বারে জ্বালাপোড়া, যন্ত্রণা বা চুলকানি এমনকি কখনও কখনও মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে। এর পরের পর্যায়ে মলদ্বারের ফোলা বাইরে বের হয়ে আসতে পারে আবার নাও আসতে পারে। আর বের হয়ে আসলেও আপনা-আপনি ভেতরে চলে যায়।
তবে এর চাইতে আর একটু খারাপ পর্যায় হলে তা হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হয় এবং মারাত্নক পর্যায় হলে তা আর ভেতরে প্রবেশ করানো যায় না। বাইরে একটি টিউমার বা মাংসপিণ্ডের মত কিছু একটা সবসময় বের হয়ে থাকবে। যা মলত্যাগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ব্যথা হবে, এমনকি গ্যাংগ্রিন বা অন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। মলদ্বারের বাইরেও পাইলস হতে পারে। এর লক্ষণগুলো হল মলদ্বারের বাইরে ফুলে যাওয়া যা হাত দিলে স্পর্শ ও অনুভব করা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে রক্তপাত বা মলদ্বারে ব্যথাও হতে পারে।
জীবনযাপন
উচ্চ আশঁযুক্ত খাবার, ফলমূল এবং শাক-সবজি বেশি করে খেতে হবে। দৈনিক ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করতে হবে। তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রতিদিন মলত্যাগের অভ্যাস যেন থাকে। মলত্যাগের সময় কষা হলে বেশি চাপ প্রয়োগ করা বা চেপে রাখা যাবে না। দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা যাবে না। ব্যায়াম কষাভাব দূর করতে সাহায্য করবে। কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।
খোসাহীন শস্য, চর্বিযুক্ত খাবার, মসৃণ চাল, কলে ছাঁটা আটা, ময়দা, চা, কফি, চীজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমল পানীয়, পরোটা, লুচি, চিপস ইত্যাদি খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। এর বদলে তাজা শাকসবজি, ফলমূল, ডাল, সালাদ, দধি, পনির, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, টকজাতীয় ফল, পাকা পেপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ভূসিযুক্ত (ঢেঁকি ছাঁটা) চাল ইত্যাদি খেতে হবে। পায়ুপথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কুসুম গরম পানি দিয়ে দিনে কয়েকবার জায়গাটা মুছতে/ভিজাতে হবে। ফোলা কমানোর জন্য আক্রান্ত স্থানে বরফ ঘষা যেতে পারে। ব্যথা কমানোর জন্য ডাক্তারের পরমর্শানুযায়ী ঔষধ গ্রহণ করতে হবে।
হোমিওপ্যাথিক কনসালটেন্ট
ডাঃ এম এইচ মোহন
প্রভাষক ও বিভাগীয় প্রধান- ক্রনিক ডিজিজ ও ফিজিওলজী বিভাগ- চাঁদপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ।
চেম্বারঃ
মায়া হোমিও হল
মেহের কালিবাড়ী,
থানা রোড সংলগ্ন,
নূরপ্লাজা,
শাহরাস্তি,চাঁদপুর।
মোবাইলঃ 01720-382646

No comments:

Post a Comment